বিষয়ঃ ১১। রাগের মাথায় মীমাংসা করা

সমাজে বসবাস করতে গেলে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা সংগঠনের মধ্যে কখনো কখনো পারস্পরিক ভুল-বোঝাবুঝি, মন-কষাকষি বা ঝগড়া-বিবাদ হতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে তৃতীয় একটি পক্ষ এগিয়ে এসে তাদের মধ্যকার বিবাদ মিটিয়ে দিতে হবে। এটা তার ঈমানি দায়িত্ব।
মুমিনরা দ্বন্দ্বে জড়ালে অন্যদের উচিত দ্রুত তাদের মধ্যে সমাধান করে দেওয়া। কিন্তু সে কাজ যদি রাগের মাথায় মিমাংসা করতে যান তাহলে সেটার ফলাফল কখনো সুফল হয় না।
রাগের মাথায় আপনি যদি মূল বিষয় না বুঝেই মীমাংসা করে দেন তাহলে এমন মিমাংসা কারো কাছেই গ্রহনযোগ্য পায় না। যার ফলে আপনি হয়ে যাবেন তাদের দু’জনের-ই শত্রু। আপনি করতে গেলেন ভালো; হলো খারাপ! তার কারণ একটাই, রাগের মাথায় কী না কী মীমাংসা করে দিয়েছেন।
এজন্যই ইসলাম আমাদেরকে পূর্ব থেকেই এ ব্যাপারে সতর্কবার্তা দিয়ে গেছে। আমাদের নিষেধ করে বলা হয়েছে, “রাগের মাথায় কারও মধ্যে মীমাংসা করো না।” যদি সেটা আমরা মানার চেষ্টা করতাম তাহলে কখনোই আমাদের এরকম পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।

রাগের মাথায় মীমাংসা করা নিষেধ, এটা হাদীসের মাধ্যমেই সুস্পষ্ট।

আব্দুর রহমান ইব্‌ন আবূ বাকরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার পিতা আমার দ্বারা সিজিস্তানের বিচারপতি উবায়দুল্লাহ ইব্‌ন আবূ বাকরাকে লিখে পাঠান যে, তুমি রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করবে না।
কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -কে বলতে শুনেছিঃ
তোমাদের মধ্যে কেউ যেন রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যাক্তির মধ্যে মীমাংসা না করে।❜  (সুনানে আন-নাসায়ী, ৫৪০৬)
[ শিক্ষণীয় বিষয় ]
এ হাদীসের মাধ্যমেই আমরা জানতে পারি, মীমাংসাকারীর জন্য যা পরিত্যাজ্য।
… ✔ রাগান্বিত অবস্থায় দুই ব্যক্তির মধ্যে মীমাংসা করতে নেই। এতে মীমাংসার পরিবর্তে গন্ডগোল-ই বেশি বাঁধবে।
… ✔ মীমাংসা করে দিব দুই ব্যক্তির মধ্যে সমঝোতা করার উদ্দেশ্যে; ঝগড়া বৃদ্ধি করার উদ্দেশ্যে নয়।
[ শেষের কথা ]
ইদানিং এই জিনিসটা খুব বেশিই দেখা যায়। অনেক ক্ষেত্রে বড় বড় সালিশেও মুরুব্বীরা রাগান্বিত অবস্থায় মীমাংসা করে দেন। এতে বাদী-বিবাদী উভয়েই বিভ্রান্তিতে পড়ে যান। তাই আমাদের উচিত, এসব ব্যাপারে সতর্ক থাকা। এজন্য মীমাংসা করতে গিয়ে যদি রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) -এর দিকনির্দেশনা অবলম্বন না করি, তবে সমঝোতার পরিবর্তে গন্ডগোল-ই বেশি হবে।