[ হাদিস ]
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেনঃ
وَمَا تَوَاضَعَ أَحَدٌ لِلَّهِ إِلَّا رَفَعَهُ اللَّهُ
❛যে আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয়ী হয়, আল্লাহ তাকে উন্নত মর্যাদার দান করেন।❜ ( সহিহ মুসলিম, ২৫৮৮ )
[ ব্যাখ্যা ]
কিছু লোকের ধারণা হচ্ছে, যখন সে অন্যদের সামনে নিজের বোধবুদ্ধি উত্তম হিসেবে প্রকাশ করতে পারবে, নিজেকে অন্যদের চেয়ে বেশি সুন্দর পোশাকে প্রদর্শন করতে পারবে, অন্যদের চেয়ে নিজেকে বেশি ধনী দেখাতে পারবে – তখন মানুষ তাকে পছন্দ করবে, সে তখন মানুষের কাছে উন্নত মর্যাদা ও বৈশিষ্ট্যবান বলে বিবেচিত হবে।
কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, আপনার এমন কাজ আপনাকে মানুষের নিকট অপছন্দনীয় বানিয়ে দেবে, আপনি মানুষের চোখে হীন হয়ে উঠবেন…
প্রকৃত উন্নতি ও মর্যাদা হচ্ছে, বিনয়ী ও নম্র হওয়া। আপনি নিজেকে অপর ভাইয়ের চেয়ে উন্নত মনে না করার মাঝেই রয়েছে আপনার প্রকৃত মর্যাদা। আল্লাহ যদি আপনাকে অপরের ওপর একটা দিক থেকে উন্নত করে থাকেন, তবে অন্যজনকে অন্যদিক থেকে অনেকভাবে উন্নত করেছেন। তাই আল্লাহ আপনাকে যা দিয়েছেন, তা নিয়ে আপনি সন্তুষ্ট থাকুন, পরিতুষ্ট থাকুন। যে যেমনই হোক, তাকে ঘৃণা করবেন না।
এখানে প্রিয় নবিজি সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের জানিয়ে দিচ্ছেন যে, যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর বান্দাদের প্রতি বিনয়ী হবে, অচিরেই আল্লাহ তাকে মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত করে তাকে মর্যাদায় উন্নত করবেন, আর আখিরাতে তাকে অনেক বড় প্রতিদান ও পুরস্কার দেবেন।
[ ফায়দা ]
১। বিনয় অনেক বড় গুণ। যে আল্লাহর কাছে মর্যাদাবান হতে চায়, সে যেন মানুষের সাথে বিনয়ী হয়।
২। অন্যদিকে হাদিসে ইঙ্গিত এসেছে, যে অহংকারী হয়, আল্লাহ তাকে তার মনস্কামনার বিপরীতটা দিয়ে থাকেন। সে যদিও উন্নত মর্যাদা চায়, কিন্তু প্রকৃতপক্ষে সে নিজের কাজের মাধ্যমে অধঃপতন ও আল্লাহর ক্রোধই কামাই করে।
[ করণীয় ]
উদাহরণস্বরূপ —-
যখন বৃদ্ধ বয়সের কাউকে (রাস্তা পার হতে) দেখবেন, তখন উনাকে বিনয়ের সাথে রাস্তা পার করতে সাহায্য করবেন।
যখন আপনার চাইতে ছোট কাউকে দেখবেন, তখন এমনটি প্রকাশ করবেন না যে, আপনি তার চেয়ে বেশি মেধাবী ও বোধসম্পন্ন; বরং তার সাথে সহজ ভাষায় সুন্দর করে কথা বলবেন।
[ শেষের কথা ]
মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নিকট প্রার্থনা করি তিনি যেন আমাদের সকলের সাথে বিনয়ী ও নম্র হওয়ার তাওফিক এবং এর ফযীলত আমাদের দান করুন। (আমিন)
বারাকাল্লাহু ফিকুম।
বইঃ হাদিস পড়ি আদব শিখি
লেখকঃ শাইখ আলী জাবির আল-ফাইফি
প্রকাশকঃ রুহামা পাবলিকেশন্স