[ হাদিস ]
আবু হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেছেনঃ
لَيْسَ الشَّدِيدُ بِالصُّرَعَةِ، إِنَّمَا الشَّدِيدُ الَّذِي يَمْلِكُ نَفْسَهُ عِنْدَ الغَضَبِ
অর্থঃ ❛ (মল্লযুদ্ধে প্রতিপক্ষকে) কুপোকাত করতে পারা ব্যক্তি বাহাদুর নয়; বরং বাহাদুর তো সে, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। ❜ (1)
[ ব্যাখ্যা ]
এ হাদিসে নিজের শারীরিক সুগঠন ও শক্তিমত্তা নিয়ে গর্ব করতে, অন্যদের মাথায় তুলে জমিনে আছড়ে মারার শক্তি নিয়ে বড়াই করতে নিষেধ করা হয়েছে। শরীরের সুষম গঠন ও শক্তিমত্তাকে বীরত্ব বলার দরজা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। প্রকৃত বীরত্ব কী, তা চিনিয়ে দেওয়া হচ্ছে। বলা হচ্ছে, মুষ্টিযুদ্ধে অন্যকে ধরাশায়ী করতে পারার চেয়েও অধিক বীরত্বের বিষয় হচ্ছে, রাগের সময় সহিষ্ণু হওয়া, ক্রোধান্বিত অবস্থায় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারা।
আপনার শক্তিমত্তা দিয়ে অন্যকে ঘায়েল করার চেষ্টা করবেন না। বরং নিজেকে আপনি উত্তম চরিত্রে শোভিত করুন। আপনার ধৈর্যশক্তি বাড়িয়ে তুলুন। নফসের এমন অনুগামী হবেন না যে, নফস আপনাকে প্ররোচিত করবে, অমুককে মারো, বন্ধুদের সামনে তাকে পরাজিত করো।… বরং আপনি এমন হাস্যোদ্দীপক নাটুকে অবস্থা থেকে বিরত থাকুন। এর বদলে আপনার সঙ্গীর দিকে হাত বাড়িয়ে মুসাফাহা করে বলুন, ‘আমরা ভাই-ভাই…’ সুতরাং আমাদের এ ভ্রাতৃত্বকে সম্মান করা উচিত।
[ ফায়দা ]
১. প্রত্যেক অবস্থাতেই অধিক ভালো ও পবিত্র কিছু করার জায়গা থাকে। সব সময় সেটার খোঁজ করুন এবং তা আমলে আনতে সর্বশক্তি ব্যয় করুন।
২. এমন অনেক বিষয় আছে, যেগুলোকে মানুষ একরকম মনে করে; কিন্তু ইসলাম সেগুলোকে অন্যভাবে দেখে। আপনি সব সময় সেগুলোকে ইসলামের দৃষ্টিতে দেখবেন, আদর্শের ভিত্তিতে মেপে নেবেন। যদি আপনি মানুষের কথা শুনতে যান, তবে তারা আপনাকে ভুল পথে নিয়ে যাবে।
[ করণীয় ]
যদি আপনি দেখেন যে, দুজন ব্যক্তির প্রত্যেকে নিজ জিহ্বার যথেচ্ছ ব্যবহার করছে আর একে অপরের দিকে গায়ের জোর দেখাতে আসছে, তখন আপনি উভয়কে বলে দিন, আত্মনিয়ন্ত্রণ এরচেয়ে বেশি কঠিন। আপনারা আপনাদের তামাশামূলক কর্মকাণ্ডকে (আত্মনিয়ন্ত্রণের গুণ অবলম্বন করে) বীরের মতো সন্ধি করে বন্ধ করতে পারো।
(1) সহিহুল বুখারি, ৬১১৪ । সহিহ মুসলিম, ২৬০৯ (আন্তর্জাতিক সংস্করণ) / সহীহ মুসলিম, ৬৫৩৭ (হাদীস একাডেমী)
বইঃ হাদিস পড়ি আদব শিখি
লেখকঃ শাইখ আলী জাবির আল-ফাইফি
প্রকাশকঃ রুহামা পাবলিকেশন